৩টি গল্প যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেবে
পৃথিবীতে কখন কি ঘটবে, সেটা অনেক আগে থেকেই ঠিক হয়ে আছে, তবুও আমরা ভেবে মরি! কিছু করার নেই, এটাই মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।
৩টি গল্প যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেবে –
গল্প -১
সুইডেনে একজন দিনমজুরের খুব ইচ্ছা ছিল সে টাইটানিকে চড়বে। এই উদ্দেশ্য সে ওভারটাইম করতো। টাইটানিক যাত্রা শুরু হওয়ার মাত্র এক মাস বাকি, পরিবারের সকলেই তাদের ভ্রমন নিয়ে খুব উৎসাহিত ছিল।
হঠাৎ তার ছেলেকে কুকুর কামড় দেওয়ার ফলে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে গেল। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ছেলেকে ৬ মাস বাইরে কোথাও নেওয়া যাবে না।
পরিবারের সকলেই খুব কষ্ট পেল। তাদের এতদিনের ইচ্ছার জন্য সে দিনরাত পরিশ্রম করেছিল। এখন সব পানিতে।১৯১২ সালে টাইটানিক যাত্রা শুরু করে, দিনমজুরটি প্রতিদিন তার সন্তানকে বকা দিত। তার স্বপ্ন ভাঙার জন্য অভিশাপ দিত।
১২ দিনের মাথায় টাইটানিক ডুবি হয়, এরপর দিনমজুরটি তার সন্তানের কাছে ক্ষমা চায়।
গল্প-২
প্রশান্ত মহাসাগরে একটি জাহাজ ডুবে যায়, জাহাজের সকল যাত্রী মারা যায়, কেবল একজন ছাড়া। মানুষটা অনেক কষ্টে একটি দ্বীপে আশ্রয় নেয়, এবং সেখানে থাকতে শুরু করে, ঘরবাড়ি বানিয়ে এবং ফল খেয়ে বেচেছিল অনেকদিন ৷
হঠাৎ একদিন তার ঘরে আগুন লেগে যায় এবং সে কান্নায় ভেঙে পরে, সৃষ্টিকর্তাকে সে অপবাদ দিতে শুরু করে, আমার সবকিছু কেড়ে নিলে, এখন আমার এইটুকুও কেড়ে নিলে তুমি?
পরের দিন একটি জাহাজ তার হই হুল্লোরের শব্দ এবং আগুন দেখে তাকে উদ্ধার করতে আসে, সে সৃষ্টিকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে।
গল্প-৩
একটি গ্রামে সকল মানুষ মাল্টিন্যাশেনাল কোম্পানিতে চাকরি করতো। তখনকার রীতি অনুযায়ী, সম্মানী ব্যক্তি মানেই মাল্টিন্যাশানাল কোম্পানিতে চাকরি করতে হবে।
লোকটা গ্রাম থেকে শহরে গেল চাকরি পাওয়ার আশায়, এত শিক্ষিত না হওয়ার কারণে সে বেশ সুবিধা করতে পারছিল না, পরবর্তীতে সে একটি মাল্টিন্যশানাল কোম্পানিতে সুইপারে কাজ পায়, সব ফর্মালিটি শেষ, এখন কেবল জয়েন করবে, কোম্পানি তাকে তার ইমেইল এড্রেস দিতে বলে, তখনকার সময় সকল কর্মকর্তাদের ইমেইল এড্রেস ছিল বাধ্যতামূলক। তার কোনো ইমেল ছিল না,ফলে সে চাকরিতে জয়েন দিতে পারেনি। রাগে দুঃখে সে পণ করে বসে সে আর চাকরিই করবে না।
গ্রাম থেকে নিয়ে আসে টাকা দিয়ে টমেটো কিনে ব্যবসা শুরু করে, ব্যবসায় প্রচুর পরিশ্রমের ফলে সে ভাল টাকা ইনকাম করছিল। একদিন একজন শিল্পপতি তার পরিশ্রম দেখে তাকে সাবানের কারখানা দিতে বলে, সে ঋণ গ্রহন করে এবং তার জমানো টাকা দিয়ে সাবানের কারখানা স্থাপন করে।
কয়েক বছর পর তার সাবানের কারখানা দেশের প্রতিটি রাজ্যে শাখা খুলে ফেলে এবং তাকে বানিয়ে দেয় কোটিপতি।
এলিকো নামের একটি বীমা কোম্পানি তার বীমা করানোর জন্য তার কাছে যায়, এলিকোর এজেন্ট তাকে ফর্ম পূরণ করতে বললে তিনি বলেন, আমার কোন ইমেইল এড্রেস নেই,,,
এই কথা শুনে এজেন্ট অবাক হয়ে যায়। তিনি বলেন, আপনার ইমেইল এড্রেস ছাড়া আপনি কোটি টাকার মালিক, আপনার ইমেইল এড্রেস থাকলে তো আপনি বিশ্বের এক নাম্বার ধনীব্যক্তি হয়ে যেতেন।
তিনি হেসে জবাব দেন”আমার ইমেইল এড্রেস থাকলে আমি হতাম সুইপার, তাই আজ পর্যন্ত ইমেইল খুলিনি”।
ওয়াট গড উইলস ইস ফর গুড।
সৃষ্টিকর্তা যা করেন ভালর জন্য করেন৷
জলাতঙ্ক রোগাক্রান্ত না হলে দিনমজুরটি হয়তো তার গল্প বলার জন্য বেচে থাকতেন না, ঘরে আগুন না লাগলে মানুষটি হয়তো কখনও উদ্ধার পেতেন না, ইমেইল আইডি থাকলে লোকটি হয়তো শিল্পপতি না হয়ে সুইপারের চাকরি করতো।
সৃষ্টিকর্তা আমাদের কখনও নিরাশ করেন না, আজকে ভাল কিছু পাইনি, ভবিষ্যৎ হয়তো আমাদের অপেক্ষা করছে।
চেষ্টা করে যেতে হবে, ডু ইউর বেস্ট এন্ড লিভ দা রেস্ট।…
যতক্ষণ ভাল কিছু না হয় অপেক্ষা করে যেতে হবে।
সৃষ্টিকর্তার নিকট বিনয়ী হতে হবে, চেষ্টা করে যেতে হবে।
সাফল্য আসবেই। সাফল্য তোমাকে ঠিকই খুজে নেবে।
Post a Comment