ভৌতিক গল্প: জমিদার বাড়ির অদ্ভুতুড়ে পুকুর

ভৌতিক গল্প: জমিদার বাড়ির অদ্ভুতুড়ে পুকুর

আমাদের এলাকার বিজয় চন্দ্র রায়ের বাড়ি সম্পর্কে আপনাদেরকে আগেই বলেছিলাম আমার “ভূতুড়ে জমিদারবাড়ি ” গল্পে। তখন আপনাদেরকে যে পুকুরের ঘাটে আমাদের লুকানোর কথা বলেছিলাম। সেই পুকুরই হচ্ছে বিজয়চন্দ্র রায় এর পুকুর।

জমিদারবাড়ির দক্ষিন দিকে এই পুকুরটি রয়েছে। শুধু যে বাড়িটাই ভয়ঙ্কর তা কিন্তু নয় এই পুকুরটাও খুবই ভয়ঙ্কর। আমাদের এলাকার লোকদের ধারনা এই পুকুরে নাকি টাকার জালা ছিল।

এই পুকুরে নাকি আগে চেইন দিয়ে সংযোজিত ৭ টা টাকার জালা ছিল।যারা জীবন্ত ছিল। এই পুকুরে নাকি মাঝে মাঝে খুব ঢেউ হতো। তখন পুকুরের মাঝে ঘুর্ণিঝড়ের মত ঘুরপাক খেত। আর সেই ঘুরপাক পুকুরের এক পাশ থেকে উঠে অপর পাশে বিলিন হয়ে যেতো।

গ্রামবাসীদের ধারনা তখন নাকি টাকার জালাগুলো পুকুরের মধ্যে চলাচল করতো। প্রতি অমাবস্যা তিথিতেই নাকি এমন হতো।

এলাকার কাউকে কাউকে নাকি স্বপ্নও দেখিয়েছিল জালা নেবার জন্য। কিন্তু সাথে কিছু চেয়েছিলও। ডাব আর গাবের যেকোনো একটা। গ্রামের লোক বলে ডাব আর গাব চাওয়া মানে ছেলে অথবা মেয়ে সন্তানকে চাওয়া। কেউ এত লোভী নয় যে নিজের সন্তানদের বিনিময়ে টাকার চালা দিবে।

কিন্তু একদিন আমাদের গ্রামের কাশেম মীরকে স্বপ্ন দেখিয়েছিল। সেই লোকের কোনো সন্তান ছিল না। তাই তার কোনো ভয়ও ছিল না। সে রাজি হয়ে গেছুল। কিন্তু শর্ত ছিল কাউকে বলা যাবে না।

নির্দিষ্ট দিনে সে এই পুকুরের পূর্ব দিকে খুচতে শুরু করেছিল। তখন ছিল গভীর রাত। এদিকে সেদিনই গ্রামে ডাকাত পড়েছিল। মানুষ সব বাইরে এসে ডাকাত ধরতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল। এদিকে খুজতে খুজতে তারা পুকুরের পাড়া চলে এসেছিল।

এত রাতে পুকরের ভেতর কাউকে কিছু খুড়তে দেখেই সবাই চিৎকার চেচামেচি করতে লাগল। এদিকে মানুষের আনাগোনা পেয়ে সপ্তজালা পূর্ব দিক থেকে মেঘর গর্জন করতে করতে একেবারে নদীতে গিয়ে নেমেছিল। আর সেখানে বেশ গভীর রাস্তার মত তৈরি হয়েছিল।

এখনো আছে সেই খাদের মত রাস্তাটা যা এই পুকুর থোকে সোজা নদীতে গিয়ে পড়েছে। পরে নাকি কাশেম মীরের পরিবার ছন্নছাড়া হয়ে গেছিল। এখন তো তাদের ভিটেয় ঘুঘু চরছে। কেউ কেউ বলে কাশেম মীর ওখান থেকে দুই একটা জালা তুলেছিল। আর তার কারনেই তার ঐ দূরবস্থা।

সে যাই হোক ব্যাপারটা ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ অদ্ভুতুড়ে লাগে ।

No comments