জাঙ্ক ইয়ার্ডের মুঠোফোন – সেজান মাহমুদ
রামপুরা টেলিভিশন সেন্টার আর বাড্ডার মাঝামাঝি বিলের মতো এলাকায় এখন নতুন নতুন বাড়ি আর অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স তোলার হিড়িক পড়েছে। এ রকম নতুন ছয়তলা একটা বিল্ডিংয়ের চিলেকোঠায় থাকে রাজন। এটা তার মামার বাড়ি। রাজনের মামা বড় সরকারি অফিসার। রাজনের বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর হলো, ফুসফুসে ক্যানসার হয়ে। তখন মামা তাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে মাকে বুঝিয়ে রাজনকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। এখানে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন। রাজনের মামাতো ভাই রাজীব একই ক্লাসে পড়ে। আর খালাতো বোন শাম্মী আপা ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্রী। চিলেকোঠায় দুই দিকে দুই বিছানায় রাজন আর রাজীব ঘুমায়। যদিও মামা বলে দিয়েছেন, দুজন আপন ভাইয়ের মতো থাকবে। কিন্তু রাজীব কেন জানি রাজনকে খুব একটা পছন্দ করে না। হয়তো মনে মনে ভাবে, তার একার আদর-যত্নে রাজন এসে ভাগ বসিয়েছে। তার পরও দুজনে মিলে একসঙ্গে স্কুলে যায়। পড়ালেখা করে। রাজন রাজীবের চেয়ে ক্লাসে ভালো ফল করে, রাজীবের রাগের পেছনে এটাও একটা কারণ হতে পারে।
রাজীব বেশির ভাগ সময় নিচের তলায় মা-বাবার কাছে চলে গেলে রাজন একা একা ছাদে দাঁড়িয়ে দূরের নানা রকমের কাজকর্ম দেখে। কাছেই রাস্তার মধ্যে বাজার বসেছে। মানুষজন কেনাকাটা করছে, দাম করছে। একজনের হাত থেকে মুরগি ছুটে গেলে মহা হইচই পড়ে যায়। বেশ দূরে প্রায় যেখানে আকাশ নেমে এসেছে মাটির কাছাকাছি, সেখানে একটা গ্রামের মতো ছোপ ছোপ এলাকা। তার ঠিক আগেই একটা বিরাট জায়গাজুড়ে লোহালক্কড়, পুরোনো গাড়ি, যন্ত্রপাতি ফেলার ব্যবস্থা, যাকে বলে ‘জাঙ্ক ইয়ার্ড’। এই ‘জাঙ্ক ইয়ার্ড’ শব্দটা শাম্মী আপার কাছ থেকে শিখেছে রাজন। একদিন বিকেলে শাম্মী আপা ছাদে এলে রাজন জিগ্যেস করেছিল, ‘ওখানে কী হয় শাম্মী আপা?’ তিনি তখন বলেছিলেন, বিদেশে এ ধরনের জায়গা, যেখানে পুরোনো জিনিসপত্র ফেলে দেওয়া হয়, তাকে বলে ‘জাঙ্ক ইয়ার্ড’। শাম্মী আপা আরও বলেছেন, ঢাকা শহরের এই একমাত্র জাঙ্ক ইয়ার্ড, যেখানে পুরোনো কম্পিউটার, প্রিন্টার, ইলেকট্রনিকস, যেগুলো একেবারে অকেজো, তা ফেলে দেওয়া হয়। কেউ কেউ এগুলো আবার সের দরে বিক্রি করে দেয়। রাজন এখন বুঝতে পারে, তার বয়সী অনেক ছেলেমেয়ে কেন এই জাঙ্ক ইয়ার্ডে কী যেন খোঁজাখুঁজি করে। হয়তো পুরোনো যন্ত্রপাতি থেকে কোনোটা নিয়ে আবার কোথাও বিক্রি করবে!
একদিন বিকেলবেলা খুব বাবার কথা মনে পড়ছিল রাজনের। বাবা সব সময় বলতেন, ভালো করে পড়ালেখা করো রাজন। তোকে অনেক বড় কিছু হতে হবে। এখন বাবার ওপর খুব অভিমানও হচ্ছে। কেন এত বেশি করে সিগারেট খেতেন বাবা, আর অকালে ক্যানসারে মারা গেলেন তাকে, মা আর ছোট বোনটাকে একা রেখে? সে ছাদে এসে দূরের জাঙ্ক ইয়ার্ডের দিকে তাকিয়ে থাকে। আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছে। মনে হচ্ছে যেকোনো সময় বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি খুব দরকার। রাজনের মনে হচ্ছে, এ রকম ঘন কালো মেঘ সে যেন তাদের গ্রামের বাড়িতেও কখনো দেখেনি। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে মাঝে মাঝে আর মেঘের বিরাট গর্জন শোনা যাচ্ছে। রাজনের মনে হলো, এক ফোঁটা বৃষ্টি যেন তার গায়ে এসে পড়ল। সে এক দৌড়ে চিলেকোঠার ঘরে চলে যাওয়ার চিন্তা করতে করতেই এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে পেল; এমন দৃশ্য জীবনে কোনো দিন দেখেনি রাজন। মনে হলো আকাশ চিরে সাধারণ বিদ্যুৎ চমকানোর চেয়ে হাজার গুণের বিদ্যুৎ ঝিলিক দিয়ে ঠিক জাঙ্ক ইয়ার্ডের ওপরে এসে পড়ল। জাঙ্ক ইয়ার্ডের সবকিছু এই দূর থেকেও যেন দেখতে পাওয়া গেল কয়েক মিনিটের জন্য। মনে হচ্ছিল সবকিছু যেন ইলেকট্রিফায়েড হয়ে গেছে। তারপর কিছুক্ষণ একদম নীরব। সবাই যেন চমকে ধমকে গেছে এই বিকট শব্দে। পরমুহূর্তেই ঝমঝম শব্দে ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি নেমে আসে। রাজন দৌড়ে নিজের ঘরে চলে যায়।
আজ শুক্রবার। স্কুল বন্ধ। রাজন একটু বেলা করে ঘুম থেকে উঠতে চায়। কিন্তু কানের কাছে কে যেন ফিসফিস করে কিছু বলছে। শুধু তা-ই নয়, কানের লতিতে আলতো করে ঠান্ডা কিছু দিয়ে নাড়াও দিচ্ছে। রাজন ভাবে, নিশ্চয় এটা রাজীবের কাজ। এভাবে ঘুমানো যায় না। রাজন চোখ ডলতে ডলতে খেয়াল করে বৃষ্টি শেষের ঝকঝকে দিনের বদলে একটা মেঘলা দিনের শুরু। তবু চিলেকোঠায় জানালা দিয়ে দিনের আলো এসে পড়েছে। পাশের বিছানায় রাজীব অঘোরে ঘুমোচ্ছে। রাজন মাথার কাছে কাউকে দেখতে পায় না। বালিশ সরিয়ে হাত দিয়ে কিছু খুঁজতে যায় আর তখনই দেখতে পায় একটা মুঠোফোন। দেখতে পুরোনো ধরনের। রাজন অবাক হয়ে ভাবে, তার তো কোনো মুঠোফোন নেই। রাজীব অনেক কান্নাকাটি করায় মামা তাকে একটা মুঠোফোন দিয়েছেন। আর বলে দিয়েছেন, এটা দিয়েই দুজনে স্কুল থেকে বা অন্য কোথাও থেকে জরুরি দরকারে ফোন করবে। রাজনের কোনো জরুরি দরকার পড়ে না, তাই ফোন করতেও হয় না। তাহলে এখানে ফোনটা এল কোত্থেকে? রাজন ফোনটা হাতে নিয়ে দেখতে থাকে। কয়েকটা বাটন টিপে দেখে কিন্তু কোনো আলো জ্বলে না। রাজন ভাবে, এই নষ্ট ফোনটা এখানে কে রেখে গেল? এমন সময় ফোনসেট থেকে কির কির শব্দে হাত-পায়ের মতো চারটি জিনিস বের হয়ে এল। রাজনকে সাপে ছুঁলেও বোধ হয় এতটা চমকে উঠত না। ভয়ে চিৎকার করতে গিয়েও গলা দিয়ে স্বর বের হয় না। হাত থেকে মুঠোফোনটা ছিটকে পড়ে যায়। ভয়ের চোটে হাত থেকে ছুড়ে দেওয়ায় যেভাবে ফোনটা ছিটকে মাটিতে পড়েছে, তাতে ভেঙে খান খান হয়ে যাবে ভেবেছিল রাজন। কিন্তু অবাক বিস্ময়ে দেখে, ফোনটা ডিগবাজি খেয়ে অনেকটা জিমন্যাস্টের মতো মেঝেতে পড়ে দুই পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। এরপর তিরতির করে মেঝে থেকে খাটের পা বেয়ে বিছানার ওপরে উঠে এল। রাজন ভয়ে ভয়ে বিছানায় বসে ফোনটার দিকে তাকিয়ে থাকে। ছোট ছোট চার হাত-পা। এই খুদে হাত দিয়েই মনে হয় তার কানের লতিতে স্পর্শ করেছিল। এবার ফোনসেটটার ছোট্ট এলসিডি স্ক্রিনে স্পষ্ট লেখা ভেসে ওঠে—হ্যালো মাই ফ্রেন্ড! রাজন ভয়ে ভয়ে ফিসফিসিয়ে বলে, ‘হ্যালো, আই এম রাজন, হু আর ইউ?’ নীলচে আলোর ব্লিংকিং লেখা টাইপ হতে থাকে—‘আই এম এফ ৪০১৯৮৭১৩’, বাট ইউ ক্যান কল মি ফোবো।’
‘ফোবো?’ রাজন জিগ্যেস করে। ফোনটি এবার স্ক্রিনে না লিখে ফিসফিসে মেটালিক ভয়েস দিয়ে বলে,
‘ইয়েস, ফোবো। আমার মেমোরিতে তা-ই দেওয়া আছে।’
রাজন হঠাৎ ভাবে, সে নিশ্চয় স্বপ্ন দেখছে। না হলে এমন তো ঘটার কথা নয়। এটা কি আসলেই একটা ফোন? তাহলে এভাবে কথাই বা বলছে কী করে? তবু রাজন বলে,
‘ঠিক আছে ফোবো, তুমি কোথা থেকে এসেছ? তুমি আসলে কী?’
‘আমার আইডি মেমোরিতে আমাকে বলা হয়েছে এসএসআই বা সুপার সিনথেটিক ইন্টেলিজেন্স। আমি এসেছি “জাঙ্ক ইয়ার্ড” থেকে। আমার মাদার মেমোরিতে সেটাই স্টোর করা আছে। মাই মাদার মেমোরি ইজ লোকেটেড অ্যাট দ্য জাঙ্ক ইয়ার্ড।’
‘আমার কাছে কীভাবে এসেছ?’ রাজন জিগ্যেস না করে পারে না। ফোবো এবার স্পষ্ট করে বলে, ‘আমার জন্মের পর প্রথম কাজ ছিল আমার কম্পার্টেবল মানুষ খুঁজে বের করা। আমার অ্যানালিসিসে তোমার ব্রেইনের ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ওয়েভ আমার সবচেয়ে কাছের। এ জন্যই তুমি আমার বন্ধু, তোমার সঙ্গে আমার অনেক কাজ।’
এই সময় দরজায় টোকা দিয়ে শাম্মী আপা ডাকেন, ‘এই রাজীব-রাজন, তোরা উঠবি না? নাশতা রেডি। ওঠ, দরজা খোল।’ দরজা খোলাই ছিল, তাই কথা বলতে বলতেই শাম্মী আপা ঘরে ঢুকে পড়েন। রাজন কিছু করার আগেই ফোবো তিরিক করে কাঁথার নিচে লুকিয়ে পড়ে। রাজন শাম্মী আপাকে ফোনটা দেখাবে ভেবেছিল কিন্তু ততক্ষণে রাজীব উঠে পড়েছে, আর ফোবোকে কোথাও দেখতে পাচ্ছে না রাজন। শাম্মী আপা বললেন, ‘তাড়াতাড়ি নিচে আয় তোরা।’ বলেই চলে গেলেন শাম্মী আপা। রাজন কাঁথা সরিয়ে ফোবোকে কোথাও দেখতে পায় না। খাটের নিচে, শেলফের আড়ালে খুঁজেও দেখতে পেল না। নিচে নেমে নাশতার টেবিলে রাজন খুব চুপচাপ থাকে। একমাত্র শাম্মী আপাকেই সে বলতে পারে ঘটনাটা। নাশতা শেষে রাজন শাম্মী আপাকে ওপরে আসতে বলে। রাজীব এখন ভিডিও গেম খেলায় ব্যস্ত থাকবে। ওর সামনে বলতে চায় না রাজন। দেখা যাবে, সবার কাছে ওকে পাগল প্রমাণ করে ছাড়বে সে। চিলেকোঠায় এসে রাজন শাম্মী আপাকে সব খুলে বলে। সেদিন জাঙ্ক ইয়ার্ডে বিজলির আঘাত থেকে আজকের ফোবো নামের মুঠোফোনের সঙ্গে আলাপচারিতা। সব শুনে শাম্মী আপা রাজনকে অবিশ্বাস করেন না। কিন্তু দুজনে মিলে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও দেখতে পায় না ফোবোকে। তখন শাম্মী আপা বলেন,
‘দ্যাখ, দুই রকমের ব্যাপার হতে পারে; সেদিনের অস্বাভাবিক রকমের বিজলির আঘাতে হয়তো কোনো অসাধারণ উপায়ে নতুন ধরনের সিনথেটিক ইন্টেলিজেন্সের সৃষ্টি হয়েছে ওই জাঙ্ক ইয়ার্ডে। ফোবো হয়তো তারই একটি প্রোটোটাইপ। মানুষ এখন পর্যন্ত যে কৃত্রিম বুদ্ধির জন্ম দিয়েছে, তা মানুষের ব্রেইনের কাছাকাছি না হলেও মুরস ল বলে খুব শিগগির অনেক উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধির জন্ম হবে। এটা হয়তো প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্ট কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্র। আরেকটা হতে পারে, আমেরিকার রসওয়েল কিংবা আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমিতে যেমন ভিনগ্রহের প্রাণী স্পেসশিপ ল্যান্ড করিয়েছিল বলে দাবি করা হয়, সে রকম কিছু নেমেছে এই জাঙ্ক ইয়ার্ডে।’
রাজন অভিমানের কণ্ঠে বলে, ‘তুমি আমাকে বিশ্বাস করছ না শাম্মী আপা?’
‘আরে বোকা শোন, আমি কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ি, আমার ইচ্ছা সাইবারনেটিক্স নিয়ে পিএইচডি করার। সাইবারনেটিক্স হলো কৃত্রিম বুদ্ধি নিয়ে পড়ার বিষয়। আমি মনে করি, জাঙ্ক ইয়ার্ডে সত্যি কোনো সিনথেটিক বুদ্ধির জন্ম হয়েছে মারাত্মক ইলেকট্রিফিকেশনে। ভিনগ্রহের প্রাণীর থেকে এটাই আমার কাছে বেশি বিশ্বাসযোগ্য।’
এ ঘটনার পর এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। প্রতিদিন রাজন আশায় আশায় বসে থাকে যদি আবার ফোবো ফিরে আসে! শাম্মী আপা এই কদিনে তাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে শত শত জিনিস শিখিয়েছেন; তুড়িং টেস্ট, নিউরাল নেটওয়ার্ক আরও কত কী! তাতে ফোবোর প্রতি অনেক বেশি মমতার জন্ম হয়েছে রাজনের। ছোট্ট, সুন্দর মুঠোফোন, হাত-পা নিয়ে কেমন একটা রোবটের মতো চেহারা, কিন্তু বুদ্ধিমান। তার বন্ধু ফোবো। কিন্তু কোথায় চলে গেল সে?
প্রতিদিনের মতো মন খারাপ করে ছাদে দাঁড়িয়ে একা একা দূরের জাঙ্ক ইয়ার্ডের দিকে তাকিয়ে আছে রাজন। আশপাশের বিরাট এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ নেই। অন্ধকার ছাদে ভয় করলেও রাজন আর কোথাও যেতে পছন্দ করে না। তবু ফোবোর কোনো দেখা নেই। ভাবতে ভাবতে রাজনের চোখ ভিজে আসে। হঠাৎ খেয়াল করে দূরে জাঙ্ক ইয়ার্ডের ওদিক থেকে একটা আতশবাজির মতো কী যেন আকাশে উঠেই পটকা ফোটার মতো ফুটল আর আলোর ফোয়ারা ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। সেই নীলচে আলোর ফোয়ারা নিভে যেতে যেতেই যেন একটা আকার নিচ্ছে। রাজন অবাক বিস্ময়ে দেখে আলোর মালায় লেখা ভেসে উঠল, ‘হ্যালো মাই ফ্রেন্ড!!’
রাজনের চিৎকার করে সবাইকে ডাকতে ইচ্ছা করছে। মনেক মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করে; ঠিক দেখেছে তো? নাকি ফোবোকে দেখার তীব্র ইচ্ছা থেকে এ রকম মনে হলো, আসলে এটা চোখের ভুল?
এমন সময় অন্ধকার থেকে শাম্মী আপা বলে ওঠেন, ‘রাজন, আমিও দেখেছি রে, হ্যালো মাই ফ্রেন্ড!’
রাজন আনন্দে জড়িয়ে ধরে শাম্মী আপাকে। ফোবো বলেছিল, তার সঙ্গে অনেক কাজ আছে। ফোবো আবার আসবে তার কাছে, আসবে তো?!!
Post a Comment